এস এম আব্দুল্লাহ সউদ, কালাই উপজেলা প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের মোস্তসা মোড় এলাকায় কালভার্টের মুখ বন্ধ করে একটি বসতবাড়ি নির্মাণের কাজ করছিলেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক প্রভাবশালী। সেই কালভার্টে মাটিভরা মুখ খুলে দিলেন উপজেলা প্রশাসন। এতে জলাবদ্ধতার হাত থেকে বেঁচে গেল হাজার একর ফসলি জমি।
গত সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) কালাই উপজেলায় "কালভার্টের মুখ বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণ,হাজার একর জমির ফসল নষ্টের আশঙ্কা" ছবিসহ পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটি কালাই উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসলে গত মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল হায়াত নিজে উপস্থিত থেকে মাটিভর্তি কালভার্টের বন্ধ মুখ অপসারণ করেন। এবং ঐ কালভার্টের কোল ঘেঁষে তোলা ইটের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেন। এতে এলাকার স্থানীয় কৃষকরা উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, যদি কালভার্টের মুখ বন্ধ থাকতো তাহলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ওইসব মাঠে জমে থাকা পানিতে ফসল তলিয়ে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা ছিল। কালভার্টের মুখ থেকে ভরাট মাটি অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার ফলে আগত বর্ষা মৌসুমের কোটি টাকার ফসল নষ্টের হাত থেকে রক্ষা পেলেন তারা।
উল্লেখ্য,কালাই উপজেলার পাঁচশিরা-মোলামগাড়ী ও করিমপুর-পাঁচগ্রাম আঞ্চলিক সড়কের মোস্তসা মোড় নামক স্থানে এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত বন্যা ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের একমাত্র কালভার্টের সম্মুখ ভাগে মাটি দিয়ে ভরাট করে দক্ষিণ পাশের মুখ বন্ধ করে এর কোল ঘেঁষে স্থায়ী পাকা বসতবাড়ী ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেন পার্শ্ববর্তী বাদাউচ্চ গ্রামের মো.আনছার আলী আকন্দের ছেলে প্রভাবশালী বদরুজ্জামান আকন্দ। ফলে কালভার্টের মুখ বন্ধ হওয়ায় বর্ষাকালে উপজেলার পাঁচগ্রাম, মাদারপুর,এলতা ও ইমামপুর গ্রামের প্রায় এক হাজার একর ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা ছিল।এমনকি পানির চাপে রাস্তায় ভাঙ্গন ধরবে বলে জানিয়েছিলেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে বেশ কয়েকজন কৃষক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করলেও কোনো কাজ হয়নি। বরং চেয়ারম্যানকে জানানোর ফলে উল্টা সেখানে কাজ আরও দ্রুত গতিতে চলছিল।ফলে এটা নিয়ে ওই এলাকার স্থানীয় কৃষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় গত সোমবার গ্রামবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গ্রামবাসীর সহযোগিতায় কালভার্টের মুখের ভরাট মাটি অপসারণ করেন।ফলে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পেলো হাজার একর ফসলি জমি।
কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.আবুল হায়াত বলেন,কালভার্টের মুখ মাটি দিয়ে বন্ধ রাখার বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদটি দৃষ্টিগোচর হলে স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় পানি নিষ্কাশনের জন্য কালভার্টের বন্ধ থাকা মুখ খুলে দেওয়া হয়েছে।জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।